টাইম ম্যানেজমেন্ট: জীবনে সাফল্য লাভের ১৯টি কার্যকর ফর্মুলা



হাতের কাজটুকু শেষ করে কে না একটু আরাম করতে চায়! আপনি যখন একটার পর একটা কাজ করেই  যাচ্ছেন, তখন আপনার সহকর্মীরা যদি কাজ শেষ করে খোশগল্পে মত্ত থাকে তখন কেমন লাগবে আপনার? আমরা সবাই প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা সময় পাই। এই নির্দিষ্ট সময়েই আপনার সমবয়সী একজন যদি বেশি কাজ করে দ্রুত সাফল্য পায়, আর আপনি হাতের কাজ করতে করতে হতাশার সাগরে সাঁতার কাটেন, তবে লাইফ স্কিল এর গুরুত্বপূর্ণ অংশটাইম ম্যানেজমেন্ট”-নিয়ে নিচের এই লেখাটি আপনার জন্য। 
আপনার আসলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ, আপনি একা নন, অধিকাংশ লোকই সময় এবং কাজের সমন্বয়হীনতার কারণে সময়মতো সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারেন না। কিন্তু নির্ধারিত পরিকল্পনার মাধ্যমে সময়কে যথাযথভাবে ব্যবহার করলে সহজে এবং অল্প সময়েই অনেক কাজ করা সম্ভব। আর বেশি কাজ করা মানেই ক্যারিয়ারের উন্নতি, সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া। 

টাইম ম্যানেজমেন্ট কি ?

সময় তার নিজের মতো বহমান। আপনি এটা ভালো করেই জানেন যে, “টাইমকে আসলেম্যানেজকরার কোনো উপায় নেই। কোন কাজের জন্য কতটুকু সময় ব্যয় করবেন, তার একটি পরিকল্পনা তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজ করাকেই বলা হয়টাইম ম্যানেজমেন্ট
আপনি সময়কে আটকে রাখতে পারবেন না। এটি কারো কাছ থেকে ধার নিতে পারবেন না, আবার পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণও করতে পারবেন না। এটিকে শুধু কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী ভাগ করে ব্যবহার করতে পারবেন।

এটি মূলত পছন্দের একটি ব্যাপার- গুরুত্বপূর্ণ কাজ নির্ধারণ করবেন, সময়ের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে সেটি বাস্তবায়ন করবেন এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী পরবর্তী কাজ শুরু করবেন।

টাইম এর ম্যানেজমেন্ট এর প্রয়োজনীয়তা কি?

টাইমকে ম্যানেজ করা মানে লাগাতারভাবে সারাদিন একের পর এক কাজ করে যাওয়া নয়। এটি মূলত কাজকে সহজীকরণের একটি পদ্ধতি, যা অল্প সময়ে মানসম্পন্ন কাজ করতে সাহায্য করে। 
এই বিষয়টির উপর দক্ষতা অর্জন করতে পারলে আপনি নির্ধারিত কাজের পরে বিশ্রামের জন্য লম্বা সময় পাবেন। পরিবারকে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারবেন, খেলাধূলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন, সর্বোপারি আপনার শখের কাজ করার জন্য যথেষ্ট সুযোগ পাবেন।
এই দক্ষতাটি মানুষের সৃজনশীলতা বাড়িয়ে দেয়। কাজ করার শক্তি এবং প্রেরণা যোগায়। এটি অনুসরণ করলে দৈনন্দিন কাজগুলো একটা ছকের মধ্যে চলে আসে। কোন কাজের জন্য কতটুকু সময় ব্যয় হচ্ছে তার একটা হিসাব পাওয়া যায়। এর ফলে কাজের কৌশল, সময়, পরিবেশ এবং পরিপার্শ্বিক অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করে সে অনুযায়ী কাজ করা যায়।
নিচে টাইম ম্যানেজমেন্টের কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হলো। এগুলো আয়ত্ত করতে পারলে আপনার ব্যক্তিজীবনে আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।

. কর্মক্ষম সময় খুজেঁ বের করুন:

সৃজনশীলতা আপনার কর্মশক্তির সাথে সরাসরি সম্পর্কিত।
দিনের কোন সময়টিতে আপনি সবচেয়ে কর্মক্ষম থাকেন সেটি খুঁজে বের করুন। যে সময়টিতে আপনি কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ করেন, সে সময়টিতে দিনের সবচেয়ে জটিল কাজটি সেরে ফেলুন। কম গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য দিনের অলস সময়টাকে বেছে নিন।
যেমন, আপনি যদি সকালে কাজ করতে পছন্দ করেন, তবে অফিসে পৌঁছেই সকল কাজের শুরুতে কঠিন গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে ফেলুন। লাঞ্চের পরে যখন ক্লান্তি এসে ভর করে, তখন -মেইল চেক করুন, প্রয়োজনীয় ফোনকল সেরে নিন, নিজের টেবিলটি গুছিয়ে নিন।
আপনি দিনের হিসাব করে পুরো সপ্তাহকে ভাগ করে নিতে পারেন। যেমন-
রবিবার: দুদিন ছুটি কাটিয়ে রবিবারে হয়তো আপনি কাজে মন বসাতে পারেন না। এজন্য এই দিনটাকে কমগুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য বরাদ্দ রাখুন। এদিন আপনি আগের সপ্তাহের কাজ রিভিউ করুন, কোথাও কোনো ত্রুটি আছে কি না দেখে নিন। এছাড়া চলতি সপ্তাহের কাজের পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা দাঁড় করতে পারেন। কোন দিন কোন কাজ করবেন, কোন কাজের জন্য কার সাথে যোগাযোগ করতে হবে, কার কাছ থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে তার একটি তালিকা তৈরি করুন।
সোমবার মঙ্গলবার: সপ্তাহের মধ্যে এই দুটি দিন আপনি সবচেয়ে কর্মক্ষম থাকবেন। তাই গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এই দুই দিনের মধ্যেই শেষ করার মতো প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
বুধবার: টানা দুদিন কাজ করার ফলে এই দিন কিছুটা ক্লান্তি এসে ভর করতে পারে। মিটিং করার জন্য এই দিনটি আদর্শ।
বৃহস্পতিবার: এই দিনটি, বিশেষ করে বিকেল বেলা হয়তো আপনার জন্য বিরক্তিকর একটা সময়। এজন্য এই দিনটিতে পুরো সপ্তাহের কাজের উপর একবার নজর বুলাতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করার জন্য এই দিনটিই অধিকতর উপযোগী। এদিন সহকর্মীদের খোঁজ-খবর নিন, সবার সাথে সম্পর্কটা ঝালাই করে নিন।

. রাতের বেলা পরবর্তী দিনের পরিকল্পনা তৈরি করে নিন

রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করুন। পাঁচ মিনিট সময় ব্যয় করে পরবর্তী দিনের জন্য একটি কর্মতালিকা তৈরি করুন। সামান্য এই কাজটি আপনার লক্ষ্য অর্জনে বড় ভূমিকা পালন করবে।
রাতের বেলায় কাজ নির্ধারণ করে রাখার ফলে সকালে কোন কাজটি আগে করবেন করবেন আর কোনটি পরে করবেন, বা আদৌ করবেন কি না, সে ঝামেলায় যাওয়ার কোনো অবকাশ নাই। এর ফলে আপনি আগের চেয়ে দ্রুত এবং সহজে কাজের মনোনিবেশ করতে পারবেন।
রাতের বেলা কর্মতালিকা লিখে রাখাকে অভ্যাসে পরিণত করুন। এটি আপনার সকালের মূল্যবান সময় বাঁচাবে এবং ঝামেলায় জড়ানো থেকে রক্ষা করবে।

. সবচেয়ে কঠিন কাজটি দিয়ে দিন শুরু করুন

খাদ্য হিসেবেব্যাঙকেমন সেটি আমার জানা নেই। তবে মনিষীগণ দিনের শুরুতে কঠিন কাজ করাকে ব্যাঙ খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে। মার্ক টোয়েন বলেন,
আপনার কাজ যদি হয় একটি ব্যাঙ খাওয়া, তবে দিনের শুরুতেই সেটি খেয়ে নেওয়া উত্তম। আর যদি দুটি ব্যাঙ খেতে হয়, তবে বড়টি আগে খাওয়া উচিৎ
মার্ক টোয়েন না হয় একটিমাত্র বাক্য ব্যয় করেছেন। ব্রায়ান ট্রেসি নামের ভদ্রলোকইট দ্যাট ফ্রগনামে আস্ত একটি বই রচনা করেছেন, যেটিতে ইনিয়ে বিনিয়ে দিনের শুরুতেই আস্ত ব্যাঙ খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। বলে রাখা দরকার, সময় ব্যবস্থাপনার উপর রচিত এই বইটি সর্বকালের অন্যতম বেস্ট সেলার।
প্রথমে সবচেয়ে কঠিন কাজটি বাছাই করুন এবং দিনের শুরুতেই কাজটি সেরে নিন। আপনার সারা দিনের অবশিষ্ট কাজের উপর এই কাজটির প্রভাব দেখতে পারবেন। প্রথম কাজটির সাফল্য অন্যান্য ছোট ছোট কাজের জন্য শক্তি যোগাবে।
গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠিন কাজটি বাছাইয়ের জন্য আপনার কর্মতালিকায় নজর দিন। সেখান থেকে বড় কাজটি বাছাই করুন। এই একটি কাজ সফলভাবে শেষ করার পর আপনার লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথ অনেকটা সুগম হয়ে যাবে, আপনি কাজ করার স্বার্থকতা খুঁজে পাবেন।
বিষয়ে বিস্তারিত পড়ুন এখানে

. গুরুত্বপূর্ণ কাজটি দিনের শুরুতেই শেষ করে ফেলুন

কাজের অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা টাইম ম্যানেজমেন্ট-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি। কাজ যত ছোট বা বড়ই হোক না কেন, গুরুত্ব অনুসারে এগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন।
যখন সকল কাজকে আপনি সমান গুরুত্ব দিবেন, তখন কোনটিই ঠিকভাবে করতে পারবেন না।
কাজের অগ্রাধিকার বাছাইয়ের জন্য যে কাজগুলো আপনার লক্ষ্য অর্জনে বেশি ভুমিকা পালন করবে, সেগুলো বাছাই করুন। কর্মতালিকা থেকে অগ্রাধিকার যাচাইয়ের জন্য “Eisenhower Matrix” পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য-
  • সকল কাজের একটি তালিকা তৈরি করুন। অগ্রাধিকার অনুযায়ী সাজানোর চিন্তা বাদ দিয়ে প্রথমে সবগুলো কাজ লিখে নিন।
  • তালিকার জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোকে যথাক্রমে ‘U’ (Urgent) এবং ‘I’ (Important) আদ্যক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করুন। কিছু কাজ জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ উভয় তালিকায় স্থান পাবে। একই সাথে কিছু কাজ কোন তালিকায়ই আসবে না। প্রথমে এই বাদপড়াগুলোকে হিসাবের বাইরে রাখুন।
  • এবার জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাজিয়ে নিন।
  • এবার তালিকার প্রথম থেকে কাজ করা শুরু করুন।
এর ফলে তালিকার দিকে তাকিয়েই আপনি সারা দিনের সম্পূর্ণ এবং অসম্পূর্ণ কাজের হিসাব পেয়ে যাবেন এবং প্রয়োজন হলে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে পারবেন।

. অন্যকে দিয়ে কাজ করানোর দিকে নজর দিন

টিম ওয়ার্ক
আপনার কর্মতালিকায় কিছু কাজ থাকবে যেগুলো জরুরি, কিন্তু তুলনামূলক গুরুত্বহীন। এই কাজগুলো অন্যকে দিয়ে করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। 
সব কাজই আপনার নিজেকে করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। ছোট ছোট কাজ অন্যকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিলে নিজে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন। এর ফলে আপনার প্রোডাক্টিভিটি অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
অন্যকে দিয়ে কাজ করানোর পূর্বে কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখুন-
  • উপযুক্ত লোক বাছাই: যাকে দিয়ে কাজ করাবেন বিষয়ে তার দক্ষতা আছে কি না তা যাচাই করে নিন। অদক্ষ লোককে দিয়ে কাজ করালে পরবর্তীতে নিজেকে আবার সংশোধনের জন্য সময় ব্যয় করতে হয়, যা খুবই বিরক্তিকর।
  • প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিন: আপনি কেমন কাজ চান সে বিষয়ে পরিস্কার নির্দেশনা দিন। প্রয়োজনে খুব সহজে কাজের প্রতিটি স্টেপ সম্পর্কে লিখিত ধারণা দিন। আপনার চাহিদা যত সহজে বুঝাতে পারবেন, কাজে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা তত কম হবে।
  • সময় নির্ধারণ করে দিন: কোন সময়ে মধ্যে আপনি সম্পূর্ণ কাজ পেতে চান তা স্পষ্ট করে বলে দিন। লম্বা সময়ের কাজ হলে মাঝে মাঝে আপডেট খবর নিন।
  • স্বচ্ছতা: আপনার চাহিদা সম্পর্কে কর্মী এবং আপনি উভয়ই স্বচ্ছ থাকুন। কাজের ক্ষেত্রে আপনার কাছে কিছু অস্পষ্ট মনে হলে সে বিষয়ে কর্মীকে জিজ্ঞাসা করুন। একইভাবে আপনার চাহিদা অনুযায়ী কাজ না হলে বা কোন পরিবর্তন থাকলে সেটি কর্মীকে স্পষ্ট ভাষায়, প্রয়োজনে লিখিতভাবে বুঝিয়ে দিন।

. নিয়মিত করতে হয় এমন কাজের জন্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করুন

আমাদের অধিকাংশ কাজই প্রযুক্তিনির্ভর। এজন্য কাজের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করুন। কিছু কাজ রয়েছে যা প্রতিদিনই বারবার করতে হয়ে। এর পেছনে বড় একটা সময় ব্যয় হয়ে যায়। একইরকম কাজের জন্য কিছু কৌশলের আশ্রয় নিন। যেমন-
  • রিমাইন্ডার হিসেবে গুগল ক্যালেন্ডার ইউজ করুন। এর ফলে কোন কাজ ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যবে।
  • বাংলা লিখার জন্য বাংলা একাডেমির নির্দেশনা অনুসরণ করুন। কম্পিউটারে বানানরীতির -বুক সংরক্ষণ রাখুন। ইংরেজি গ্রামারের জন্য Grammarly ব্যবহার করুন।
  • সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য Buffer ব্যবহার করুন।
  • ফরম ফিল-আপের ঝামেলা থেকে মুক্তির জন্য LastPass ব্যবহার করুন। এটি আপনার পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করে বার বার তথ্য দিয়ে ফরম পূরণের ঝামেলা থেকে রক্ষা করবে।
  • মাসিক/সাপ্তাহিক রিপোর্টিং এর জন্য টেম্পলেট তৈরি করে রাখুন। এটি আপনার কাজকে সহজ করতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে।

. কাজের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করুন

কোন কাজের জন্য কতটুকু সময় ব্যয় করবেন তা কাজ শুরুর পূর্বেই নির্ধারণ করে রাখুন। সময় নির্ধারণ করে কাজ করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার ব্যাপারে ব্রেইন আপনাকে ফোর্স করবে। এর ফলে কাজে গতি আসবে।
এজন্য স্টপওয়াচ ব্যবহার করতে পারেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে সময় দেখে কাজের অগ্রগতি হিসাব করুন। এটি প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়া কোন কাজে কতটুকু সময় ব্যয় হবে তা নির্ধারণ করা গেলে সারা দিন বা সপ্তাহের পরিকল্পনা তৈরি সহজ হয়। হাঠৎ করে জমে যাওয়া কাজের চাপে পড়তে হবে না।
আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন

. প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে চলুন

কাজের সময় মনযোগে বিচ্ছিন্নতার জন্য প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, ইরভাইন-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, কাজের সময় মনযোগ হারিয়ে ফেললে তা পুনরুদ্ধারের জন্য গড়ে ২৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ড সময় ব্যয় হয়।
এজন্য কাজের সময় যাতে অন্য কোনো দিকে মনোযোগ ডাইভার্ট না হয় সেদিকে জোর দেওয়া প্রয়োজন। এজন্য নিচের পদ্ধতিগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন-
  • মোবাইল, ট্যবলেট, কম্পিউটারের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন। সম্ভব হলে অফলাইনে থাকুন।
  • মোবাইল ফোন হাতের নাগালের বাইরে রাখুন।
  • কানে একটা হেডফোন গুঁজে রাখতে পারেন। এর ফলে খুব জরুরি কোনো বিষয় ছাড়া কেউ আপনার সাথে কথা বলতে আসবে না।
  • আকর্ষণীয় কোনো আর্টিকেল পেলে সেটি পরবর্তী সময়ে পড়ার জন্য Pocket বা Instapaper- সেইভ করে রাখুন।
  • কাজের জন্য ইন্টারনেটের প্রয়োজন না হলে ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ করে রাখুন।
  • মেসেঞ্জার, হোয়াটসএপ ইত্যাদি সোশ্যাল চ্যাটিং সাইটেডু নট টিস্টার্বমোড চালু রাখুন।
  • সম্ভব হলে কোলাহল বা অন্যান বাধা এড়ানোর জন্য অফিসের দরজা বন্ধ করে কাজ করুন।

. দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন

প্রতিদিনই আমাদেরকে ছোট, বড়, মাঝারি বিভিন্ন রকম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এসব সিদ্ধান্তের ৯০% আসলে খুব একটা গুরুত্ব বহন করে না। অবশিষ্ট ১০% সিদ্ধান্তের ব্যাপারে গভীর চিন্তা দাবী রাখে।
ছোট সিদ্ধান্তগুলো সাধারণত একটি দিনের জন্য গ্রহণ করা হয়। যেমন, আপনি আজকে কি পরবেন, বা কোথায় খাবার খাবেন ইত্যাদি।
মাঝারি সিদ্ধান্তগুলো বছর খানেকের জন্য গ্রহণ করা হয়। যেমন, বাচ্চাকে কোন স্কুলে ভর্তি করবেন, বা বাসা চেঞ্জ করবেন কি না ইত্যাদি।
দীর্ঘ সময়ের জন্য খুব কম বিষয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেমন, বিনিয়োগ, ক্যারিয়ার ইত্যাদি। এই দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্তগুলোর জন্য অনেক যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন হয়।
Suzy Welch এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ১০-১০-১০ ফর্মুলা প্রয়োগরে সুপারিশ করেছেন। এজন্য সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আপনি নিজেকে নিচের তিনটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন-
  • দশ মিনিট পর এই সিদ্ধান্তের ভূমিকা কেমন হবে?
  • দশ মাস পর কি এটি কোনো প্রভাব রাখবে? এবং
  • দশ বছর পর এখনকার সিদ্ধান্তের ফলাফল কি হবে?
অভিজ্ঞজনেরা ছোট এবং মাঝারি সিদ্ধান্তের জন্য খুব একটা সময় ব্যয় করেন না। আপনাকেও এসব বিষয়ে দীর্ঘ সময় ব্যয় না করার চর্চা করতে হবে। (পড়ুন ১০ ধাপে সিদ্ধান্ত গ্রহণ)

১০. সময়ের হিসাব রাখুন (সত্যিকারের টাইম ম্যানেজমেন্ট )

কোন কাজের জন্য আপনার কতটুকু সময় ব্যয় হয় তার কি কোনো হিসাব রাখেন? আপনি হয়তো সম্ভাব্য একটা সময় আইডিয়া করতে পারবেন, কিন্তু সঠিক হিসাব বলতে পারবেন না।
টাইম ট্র্যাকিং-এর মাধ্যমে আপনার সময়ের হিসাব নিন। কতটুকু সময় কাজে লাগাচ্ছেন আর কতটুকু সময় গুরুত্বহীন এবং অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় করছেন তার একটি হিসাব পেয়ে যাবেন।
হয়তো আপনি নিজের অজান্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনের গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ ব্যয় করে যাচ্ছেন। সময়ের নিরীক্ষা করলে আপনি নিজের উন্নতির দিকে অধিক মনযোগ দিতে পারবেন।

১১. গড়িমসি বাদ দিয়ে কাজ শুরু করে দিন

করব কি করব না, এখন করব নাকি পরে করব- এমন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে আমরা হয়তো আপনি অনেকটা সময় ব্যয় করে ফেলেন। এই দোটানা মনোভাব কাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দেয়।
এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার জন্য David Allen-এরদুই মিনিট রুলপ্রয়োগ করুন। এই রুলটি দুটি ভাগে বিভক্ত-
. যদি দেখেন আপনি কাজটি দুই মিনিটে শেষ করতে পারবেন, তাহলে দ্রুত করে ফেলুন। এটিকে কর্মতালিকায় যোগ করবেন না, পরে করার জন্য ফেলে রাখবেন না, কাজটি করার জন্য অন্য কাউকে দায়িত্ব দিবেন না। যেমন-
  • কাউকে -মেইল পাঠানো
  • কাউকে কোন কাজের অগ্রগতি জানানো
  • চা খেতে খেতে সারা দিনের কাজের উপর একবার রিভিউ করা
  • অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ডেস্ক গুছিয়ে রাখা ইত্যাদি
. যদি দেখেন কাজ করার জন্য দুই মিনিটের বেশি সময়ের প্রয়োজন, তাহলেও শুরু করে দিন। একবার শুরু হয়ে গেলে কাজ চলতেই থাকবে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুরু করাটাই বড় সমস্যা। যেকোনো কাজ শুরু করেছেন মানে আপনি সবচেয়ে বড় বাধাটি অতিক্রম করে ফেলেছেন। যেমন-
  • দুশো পৃষ্ঠার একটি বই লিখবেন? দুই মিনিটে অন্তত পঞ্চাশটি শব্দ লিখুন।
  • ব্যায়াম শুরু করবেন করবেন করেও করছেন না? এখনই দুই মিনিটের জন্য লাফালাফি শুরু করে দিন। দশটা পুশ-আপ দিন।
  • বন্ধুদের নিয়ে ট্যুরে যেতে চান? এখনই তাদে সাথে ফোনে যোগাযোগ শুরু করুন।

১২. “হ্যাঁবলার চেয়েনাবলার উপর জোর দিন

প্রয়োজনেনাবলতে হয়
টাইম ম্যানেজমেন্ট-এর বড় একটি শক্তির জায়গা হচ্ছেনাবলতে শিখা। পেশাগত ক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্য বা মতের সাথে যায় না, বা আপনার দায়িত্ব নয়, এমন কাজের প্রতি হ্যাঁ বলেছেন মানেই মরেছেন।
বিষয়ে ওয়ারেন বাফেট বলেছেন-
সফল ব্যক্তি এবং অধিক সফল ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে অধিকর সফল ব্যক্তিরা প্রায় সকল ক্ষেত্রেইনাবলেন।
কিন্তু কথা হচ্ছে, আপনি কোন বিষয়েনাবলবেন সেটি বুঝবেন কিভাবে? (আরও পড়ুন এখানে )
এমনও তো হতে পারে, আপনার একটিনা’-এর কারণে জীবনের মোড় ঘুরানোর মতো সুযোগ হারিয়ে যেতে পারে। ওয়ারেন বাফেট এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একটি রুল রেখে গেছেন। সেটি হচ্ছে-
. প্রথমে আপনার ক্যারিয়ার সংক্রান্ত ২৫টি লক্ষ্য লিখে ফেলুন। এবার তালিকা থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি পয়েন্টকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করুন।
. এবার বাকি বিশটি লক্ষ্যকে পুরোদমে তালিকা থেকে মুছে ফেলুন। বাকি পাঁচটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করে দিন।
এই পাঁচটিই হচ্ছে আপনার মূল লক্ষ্য। বাকি লক্ষ্যগুলোর ব্যাপরে চোখ বুজে না বলতে থাকুন।
আরও পড়ুন এখানে

১৩. বিরতির সময়কে কাজে লাগান

আমরা প্রতিদিন লাইনে দাঁড়িয়ে, গাড়িতে বা ওয়েটিং রুমে বসে, দুটি কাজের বিরতিতে - ঘন্টার মতো সময় ব্যয় করি। এই সময়টিকে কাজে লাগান।গ্যাপ টাইম’- বড় কাজ করা সম্ভব নয়। এজন্য ছোট ছোট কাজগুলো এসময়ই সেরে নিন।
নিচের কাজগুলো করার মাধ্যমে আপনি প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া সময়টাকে কাজে লাগাতে পারেন-
  • আপনার পেশা সংক্রান্ত বিষয়ে স্টাডি করুন। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ভালমানের আর্টিকেল পড়ুন।
  • বই বড়ুন। সেইভ করে রাখা অদেখা ভিডিও বা Pocket- রাখা আর্টিকেলটি পড়ে নিন।
  • কম্পিউটারের ফাইল, ফোল্ডার, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি সাজিয়ে নিন।
  • দিনের বাকি সময়ের, পরবর্তী দিনের বা সপ্তাহের কাজের তালিকা তৈরি করে নিন।
  • আগ্রহের বিষয়ের পডকাস্ট শুনুন।
  • নতুন ভাষা শিখুন। দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভাষায় দক্ষতা বৃদ্ধিতে মনযোগ দিন।
  • একটু হাঁটুন। মন এবং শরীরটাকে ফ্রেশ করে নিন।

১৪. ৮০/২০ ফর্মুলা অনুসরণ করুন

৮০/২০ ফর্মুলার মূল কথা হচ্ছেমোট কাজের ২০% দ্বারা মোট ফলাফলের ৮০% ফলাফল পাওয়া যায় অর্থাৎ, আপনার কাজের মাত্র ২০ শতাংশ কাজই ৮০ শতাংশ ফলাফল এনে দেয়।
৮০% ভাগ কাজ করে ২০% ফলাফল পাবেন। আবার মাত্র ২০% কাজ করে ৮০% ফলাফল পাবেন। ৮০/২০ ফর্মুলা টাইম ম্যনেজমেন্ট-এর বড় একটি কৌশল।
প্রথমে ২০% কাজ নির্ধারণ করুন। এরপর অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজগুলো সেরে ফেলুন।
৮০/২০ ফর্মুলা প্রয়োগের সময় নিজেকে নিচের প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করুন-
  • প্রথম ২০% কাজের দ্বারা কি ৮০% ফলাফল পাওয়া যাবে?
  • কাজের ক্ষেত্রে ৮০% বাধা কি ২০% জায়গা থেকে আসে?
  • আপনার ২০% কাজ কি ৮০% কাজের আনন্দ দিবে?
  • আপনার টিমের ২০% শক্তিই কি ৮০% কাজ করছে?
  • চলমান কাজগুলোর ২০% কি ৮০% সমস্যার সৃষ্টি করছে?
  • ৮০% কাস্টমারই কি আপনার ২০% প্রোডাক্ট ব্যবহার করছে?২০% কাস্টমারই কি ৮০% অভিযোগ দিচ্ছে?

১৫. স্বয়ংক্রিয় সিদ্ধান্ত

প্রতিনিয়ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঝামেলা থেকে আপনার ব্রেইনকে মুক্তি দিন। কিছু বিষয় আছে একবারে নির্ধারণ করে রাখলে পরবর্তীতে শুধু বাছাই করে নিলেই হয়।
বারবার যাচাই-বাছাই করার ঝামেলায় যেতে হয় না। এজন্য কিছু সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করে রাখুন। যেমন-
  • টাকা হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই সেভিং একাউন্টের অংশটি জমা করে নিন।
  • পুরো সপ্তাহের কাপড়-চোপড় সিরিয়াল অনুযায়ী আলমিরাতে সাজিয়ে রাখুন।
  • সারা সপ্তাহের বাজার একদিনে করে নিন। অথবা কোনদিন কোনটি কিনবেন আগ থেকে নির্ধারণ করে রাখুন।
  • নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন ফোনের চার্জার, ডায়েরি, কলম ইত্যাদি হাতের কাছে রাখুন।
  • সকালের এলার্ম পুরো মাসের জন্য একবারে সেট করে রাখুন। রাতের বেলা মোবাইলেরস্লিপ মোডসার্ভিসটি অটো এক্টিভ করে রাখুন।

১৬. মাল্টিটাস্কিং বন্ধ করুন

মাল্টিটাস্কিং- সাফল্যের অন্তরায়
মানুষের মস্তিষ্ক একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি মাত্র কাজের জন্য ডিজাইন করা। এক সাথে একাধিক কাজ করা বা মাল্টিটাস্কিং আসলে আমাদের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে পারে না।
এজন্য একসাথে একাধিক কাজে হাত দিবেন না। পূর্ণ মনযোগ দিয়ে একটি কাজ ভালভাবে শেষ করুন। এরপর অন্য কাজের দিকে নজর দিন। একাধিক কাজ তো দূরের কথা, একটিমাত্র কাজ করার সময় মনযোগে ব্যাঘাত না ঘটানোর জন্য সকল প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে চলুন। কারণ, মনযোগই কাজের কোয়ালিটি নির্ধারণ করে, সময় বাঁচায়।
একাধিক কাজ তো দূরের কথা, একটিমাত্র কাজ করার সময় মনযোগে ব্যাঘাত না ঘটানোর জন্য সকল প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে চলুন। কারণ, মনযোগই কাজের কোয়ালিটি নির্ধারণ করে, সময় বাঁচায়।
সিঙ্গেল টাস্কিং-এর জন্য Pomodoro টেকনিক অবলম্বন করুন। পঁচিশ মিনিটের জন্য অন্যসব বাদ দিয়ে একটি কাজ করুন।

১৭. সব কাজ পারফেক্টলি করার চিন্তা বাদ দিন

দক্ষ হওয়ার চিন্তা আপনার দক্ষতা অর্জনকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এই চিন্তা মাথায় নিয়ে আপনি সকল কাজ যথাসময়ে করতে পারবেন না।
কর্মতালিকার প্রথম কাজটি শেষ করে আপনি হয়তো আপানি দ্বিতীয় কাজটি শুরু করতে যাচ্ছেন। এমন সময় মনে হলো আগের কাজটি আর ভালোভাবে করা উচিৎ ছিল। তখন হাতের কাজটি ফেলে রেখে পুনরায় আগের কাজে মনযোগ দিলেন। এতে আপনার কাজের গতি কমে আসবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করাটাও একটা দক্ষতা- এই বিষয়টি মাথায় রাখুন। সব কাজ শতভাগ নিখুঁত করা সম্ভব নয়। তাহলে একই কাজের পেছনে সারাদিন নষ্ট হয়ে যাবে।
অপরদিকে একই কাজ যদি বারকয়েক করে ফেলেন তবে দক্ষতাটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়ত্বে চলে আসবে। এজন্য একদম পারফেক্টলি করার চিন্তা বাদ দিয়ে অন্যান্য বিষয়ের প্রতি নজর দিন।

১৮. “করা যাবে নাকাজের তালিকা তৈরি করুন

আপনি হয়তো কোনো একটি অভ্যাস বদলানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কিন্তু বদলাতে পারছেন না। এমনটি হলে আপনিটু-ডু লিস্টএর পাশাপাশিটু-ডু নটকাজের তালিকা তৈরি করুন।
কোন কাজগুলো আপনি বাদ দিতে চান সেগুলোর দিকে নজর দিন। সারাদিন কি কি কাজ করলেন সে খবরের পাশাপাশি কি কি কাজ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারলেন তাও মনিটরিং করুন। এর ফলে আপনার নিজের খারাপ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে এসে সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করতে পারবেন।
উদাহরণস্বরুপ, আপনি নিচের মতো করে টু ডু-নট লিস্ট তৈরি করতে পারেন-
  • সকাল বেলা -মেইলের পেছনে সময় নষ্ট করব না। এই সময়টা সবচেয়ে কঠিন কাজের জন্য বরাদ্দ।
  • অফিসের শুরুতেই কোনো মিটিং করব না।
  • নিজের ক্ষমতার বাইরে কোনো কাজের বিষয়ে কাউকে ভরসা দেব না।
  • নির্ধারিত টপিক ছাড়া কোনো মিটিং বা লম্বা ফোনালাপ করব না।

১৯. নিজেকে সময় দিন

অবসর সময়কে উপভোগ করুন
প্রযুক্তির এই যুগে আমরা প্রায় সর্বক্ষণই কোনো না কোনোভাবে কাজের সাথে জড়িত থাকে। এরপরও সপ্তাহের শেষে আমাদের মনে হয় কিছু কাজ বাকি রয়ে গেছে বা সপ্তাহে কাজটা একটু কম হয়ে গেছে। এই অনুভূতিটুকু আসলে সারাজীবনই থাকবে।
মানুষ হিসেবে আমাদের বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে, পরিবার-পরিজনের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। শুধু কাজের প্রতি নিজেকে উৎসর্গ না করে সেদিকেও নজর দিন। কাজের ক্লান্তি দূর করার জন্য, নিজেকে উজ্জীবিত করার জন্য কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিন।
মাঝে মধ্যে ছুটি নিয়ে বেড়াতে যান। এটি আপনার ক্লান্তি মুছে দিয়ে কাজের নতুন উদ্যমে কাজ করতে সহায়তা করবে।

শেষ কথা

কাজের মধ্যে নিজেদের ডুবিয়ে রেখে আমরা প্রায়ই নিজেদের আরাম-আয়েশ এবং শখ-আহ্লাদের কথা ভুলে যাই। কিন্তু কাজের মূল্য উদ্দেশ্য তো হচ্ছে উপভোগ করা, নিজেকে আরামে রাখা। এজন্য আপনার শখের পেছনে একটু সময় ব্যয় করা দরকার।
আনন্দের সাথে কাজ করুন। কাজকে ভালবাসতে শিখুন। যখন কাজকে আপনি প্যাশন হিসেবে নিন, কাজের জন্য নিজের সৃজনশীল সত্ত্বাকে উজাড় করে দিয়ে কাজ করুন। দেখবেন, টাইম ম্যানেজমেন্ট-এর এসবা বাধা ধরা নিয়ম অনসুরণ খুব একটা প্রয়োজন হবে না।
আরও জানতে নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন-